RAM এর পূর্ণরূপ হলো Random Access Memory. যাকে সংক্ষেপে র্যাম(RAM) বলে। একটি ডিভাইস এর সমস্ত তথ্য Ram অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে। প্রসেসর প্রাথমিকভাবে র্যামে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা করে এবং পরবর্তীতে তা প্রক্রিয়াজাত করে। Ram থেকে যে কোন ক্রমে এবং দ্রুত ডাটা অ্যাক্সেস করা যায় বলে একে রেনডম এক্সেস মেমোরি বলে। সুতরাং Ram কাকে বলে এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, যে যন্ত্র কম্পিউটারের বর্তমান বা তৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ অস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে এবং দ্রুতগতিতে তা সরবরাহ করে তাকে র্যাম বলে।
র্যাম কেন অস্থায়ী মেমোরি
র্যামে সব তথ্য অস্থায়ী জমা থাকে। যেমন: অপারেটিং সিস্টেম সাভিস, ব্রাউজার, গেইমসহ আমরা যখন যেসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। র্যাম স্থায়ীভাবে কোনকিছু মনে রাখতে পারে না। কম্পিউটারের পাওয়ার বন্ধ করার সাথে সাথে র্যামের সকল তথ্য মুছে যায়। এজন্যে একে(Volatile)টেকনোলজি বলা হয়। ভোলাটাইল (Volatile) বলতে বুঝায় একবার যদি এর পাওয়ার বন্ধ হয়ে যায়, ইহা সবকিছু ভুলে যায়। ক্ষণস্থায়ী মেমোরি হলেও ইহা উচ্চগতিতে তথ্য সরবরাহ করতে পারে। যা হার্ডডিস্ক(Hard Disk) বা এসএসডি(SSD) করতে পারে না।
র্যাম কিভাবে কাজ করে
অনেকগুলো ট্রানজিস্টার ও ক্যাপাসিটরের সমন্বয়ে তৈরী হয় র্যামের মেমোরি সেল। র্যামের ক্যাপাসিটরের উদাহরণ হলো বালতির মতো তবে তা ফুটো বা লিক। যার কারণে ডাটা নিমিষেই খালি হয়ে যেতে পারে। মেমোরি সেল ডাটাকে 0 এবং 1 এই দুই বাইনারি সংখ্যা দ্বারা সংরক্ষণ করে। ডাটা রিচার্জ হলে 1 আর ডিসচার্জ হলে 0 এই কাজ সম্পন্ন হয় মেমোরি কন্ট্রোলারের মাধ্যমে। র্যামের কাজ হচ্ছে আপনি যে সফটওয়্যার(Software) ব্যবহার করতে চান তা হার্ডডিস্ক থেকে এনে নির্দেশ অনুযায়ী রান(run) করবে। তবে আমরা সরাসরি র্যামকে নিদের্শ প্রদান করতে পারি না, CPU র্যামকে নিদের্শ দিয়ে থাকে। ধরুন, আপনি কম্পিউটারের গুগল ক্রোম ব্রাউজার(Google Chrome browser) ওপেন করার জন্য ক্লিক করেছেন। এখন প্রসেসর র্যামকে নিদের্শ দিবে এটি ওপেন করার জন্য, র্যাম হার্ডডিস্ক থেকে গুগল ক্রোমের ডাটা তার নিজের মধ্যে লোড করে ব্রাউজারটি ওপেন করবে।
র্যাম সাইজ কত জিবি হলে ভালো?
আপনার কত জিবি র্যাম হলে কম্পিউটারের স্পিড ভালো হবে তা নির্ভর করবে কাজের ধরণ ও পিসির অন্যান্য ডিভাইসের ক্ষমতার উপর। সাধারণত কম্পিউটারে 1GB, 2GB, 3GB, 4GB, 4GB, 5GB, 6GB, 7GB, 8GB র্যাম ব্যবহার করা হয়। তবে শুধু র্যামের ধারণ ক্ষমতা বেশি হলেই কমপিউটারের পারফরমেন্স ভালো হবে তা ঠিক নয়। আপনার মাদারবোর্ড, প্রসেসর, হার্ডডিক্স, অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন ইত্যাদির সমন্বয়ে পারফরম্যান্স বাড়বে। এছাড়াও দেখতে হবে আপনার Ram কত মেগাহার্জ(MHz) বা এমবিএস ডাটা ট্রান্সফার করতে সক্ষম। এইসব কারণে দেখা যায় কেউ ২ জিবি র্যাম দিয়ে খুব ভালো স্পিড পাচ্ছে আবার কেউ ৮ জিবি র্যাম ব্যবহার করেও পিসি স্লো হচ্ছে।
র্যামের প্রকারভেদ
র্যাম বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। বর্তমানে সবচেয়ে কমন নাম হচ্ছে ডিডিআর৪(DDR4)। যার পুরানো সিস্টেম হলো যথাক্রমে ডিডিআর৩(DDR3), ডিডিআর২(DDR2), ডিডিআর১(DDR1)বা ডিডিআর(DDR)। এখানে সংখ্যা্ দ্বারা জেনারেশন বুঝায় যা দ্রুত গতির ম্যাগাহার্জ(MHz) ট্রান্সপার করে।
র্যামের আরেকটি কমন প্রকার হলো ভির্যাম(VRAM) বা ভিডিও র্যাম।যা ভিডিও গেইমস খেলার ক্ষেত্রে সহায়ক।বর্তমানে গ্রাফিক্স কার্ড(Graphics Card) এর সাথে এটি সংযুক্ত থাকে। তবে গ্রাফিক্স কার্ড এ মূলত জিডিডিআর(GDDR) র্যাম ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অধিকাংশ আধুনিক গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করে জিডিডিআর৬(GDDR6)। এছাড়াও কিছু গ্রাফিক্স কার্ড VRAM হিসাবে হাই ব্যান্ডউইথ মেমোরি (High Bandwidth Memory)ব্যবহার করে থাকে। HBM, HBM2, HBM2e ইত্যাদি আলাদা পারপরমেন্স দিয়ে থাকে।
র্যামের গুরুত্ব
ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ কম্পিউটারে র্যামের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। মোবাইল, ট্যাব এইসব ছোট ডিভাইসের জন্যও র্যামের গুরুত্ব অপরিসীম। কম্পিউটারের কাজকে গতিশীল করতে র্যামের বিকল্প নেই। প্রয়োজনের তুলনায় র্যাম কম হলে পিসি স্লো(Slow) হবে। তবে র্যাম সব কিছুর সমন্বয়ে কম্পিউটারের পারপরমেন্স বৃদ্ধি করে। মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক, প্রসেসর ইত্যাদির ক্ষমতা অনুযায়ী র্যাম যুক্ত করলে ভালো স্পিড আশা করা যায়। এছাড়া হার্ডডিস্ক এর পরিবর্তে এসএসডি(SSD) ব্যবহার করলে গতি বৃদ্ধি পায়। ফাস্টার সিপিইউ(CPU) এবং গ্রাফিক্স কার্ড থাকলে RAM আপগ্রেড করা উচিত।
পরিশেষে, সকল ডিভাইসের জন্য র্যাম গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট। সবকিছুর সমন্বয় ঠিক থাকলে র্যাম বৃদ্ধি করলে আপনার ডিভাইসের স্পিড অনেকগুন বেড়ে যাবে। তাই আজকাল মানুষ জানতে চায় মোবাইলের র্যাম কত, কম্পিউটারের Ram কত? এজন্যে অনেকেই ডিভাইস কিনার সময় র্যাম কত জিবি আছে তা দেখে নেয়।
Thank you so much for your writing ❤️🖤
ধন্যবাদ !