২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এই স্বাধীনতা দিবসের কারণ কি? এর পিছনের ইতিহাস কি? এসব জানে কয়জন? এই স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন লক্ষ লক্ষ শহীদ।
কবে থেকে স্বাধীনতা দিবসের শুরু হয়েছে
১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে স্বাধীনতা দিবসের সূচনা হয়। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় লাভ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর। যদিও আমরা এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালন করি তবে ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন।
কেন স্বাধীনতার ডাক দেওয়া হয়েছে
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। কিন্তু পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী তা মানতে নারাজ। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্তির পর থেকে পাকিস্তান সরকার বাঙালিদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ এর মাধ্যমে গভীর রাতে নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাস, ইপিআর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনে হাজার হাজার বাঙালির উপর অর্তকিত আক্রমণ করে। এজন্য ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রামের কালুর ঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে তৎকালীন সেনাবাহিনীর মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং মুক্তি সংগ্রামের ঘোষণা দেন।
পাকিস্তানের সাথে মূলত কি নিয়ে বিরোধ
পাকিস্তানের সাথে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতিসহ কোন কিছুই পুরোপুরি মিল ছিলনা। আমাদের মাতৃভাষাকে কেড়ে নিয়ে উর্দুকে রাষ্টভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিলে বাংলার দামাল ছেলেরা ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তা রুখে দিয়ে। এরপরও তারা বিভিন্নভাবে আমাদের উপর জুলুম করতে থেকে। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানসহ সব কিছুতে তারা আমাদের সাথে বিরোধ করে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করলেও তারা ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে টালবাহানা শুরু করে।
স্বাধীনতা দিবস আমাদের কি শিক্ষা দেয়
স্বাধীনতার ইতিহাসকে স্মরণ রাখার জন্যেই স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। এই স্বাধীনতা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। এটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে-
- শত্রু যত শক্তিধরই হোক না কেন ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা সম্ভব।
- কারো ন্যায্য অধিকার হরণ করে টিকা থাকা যায় না।
- ভবিষৎতে কেউ যেন এই স্বাধীনতার অধিকার বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য সচেতন থাকতে হবে।
- যারা দেশের জন্যে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে তারা অমর। আজও মানুষ তাদের স্মরণ করে।
- ঐক্য থাকলে সব কিছুই অর্জন সহজ হয়।
স্বাধীনতা দিবস আমাদের করণীয় কি
শহীদের স্মরণ করে তাদের জন্য দোয়া করতে হবে। তরুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরতে হবে এবং এই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সজাগ থাকতে হবে।