সড়ক দূর্ঘটনা রোধে ও ট্রাফিক আইনের যথাযত অনুসরণের জন্য চালকের কিছু করণীয় ও বর্জণীয় কাজ রয়েছে। যা মেনে চলা একজন চালকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। নিচে এগুলো দেওয়া হলো-
চালকের করণীয় কাজ
Driver ki ki kaj korbe
- ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সাইন/ সিগনাল ও ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ মেনে চলুন, দুর্ঘটনা থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকুন।
- গাড়ি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করুন, পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করুন।
- রাস্তার শৃংখলা বজায় রাখতে আপনার সচেতন ইচ্ছাই যথেষ্ট।
- মহাসড়কের সর্বোচ্চ গতি-সীমা নির্দেশক ট্রাফিক সাইনের নির্দেশনা মেনে চলুন।
- গাড়ি বের করার পূর্বে ব্রেক, ক্লাচ, স্টিয়ারিং, হর্ণ প্রভৃতি ঠিকভাবে কাজ করছে কি-না পরীক্ষা করে নিন।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট(ব্লু-বুক), ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট-পারমিট, ইন্স্যুরেন্স সনদ ইত্যাদির মূল কপি সাথে আছে কি-না দেখে নিন।
- গাড়িতে প্রয়োজনীয় টুলস, জ্যাক, স্পেয়ার হুইল, অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র এবং ফার্স্ট এইড বক্স আছে কিনা দেখে নিন।
- গাড়ীর চালককে অবশ্যই সীট বেল্ট বেঁধে গাড়ী চালাতে হবে। গাড়ীর হেড লাইটের উপরি ভাগে ১/৩ অংশে কালো রং ব্যবহার করতে হবে।
- গন্তব্যে পৌঁছানোর পথে ফেরী, ব্রীজ এবং রাস্তার টোল খরচ সাথে রাখুন।
- পরিস্কার পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিধান করুন।
- বৃষ্টির সময় সীমিত গতিতে গাড়ি চালান।
- তেলের ট্যাংকে তেল আছে কিনা দেখে নিন।
- সকল বেল্ট(ফ্যান বেল্ট, এসি বেল্ট, স্টিয়ারিং বেল্ট) ঠিক আছে কিনা দেখে নিন।
- ড্রাইভিং মিরর, ব্রেক, হেড লাইট, ব্রেক লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট, উইন্ডশিল্ড, ওয়াইপার ইত্যাদি ঠিক আছে কিনা দেখে নিন।
- কোন যান্ত্রিক ত্রুটির সংকেত পেলে অবশ্যই গাড়িকে থামিয়ে পরীক্ষা করুন।
- গাড়ির গতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে গিয়ার বদল করুন।
- টার্নিং বা লেন পরিবর্তনের সময় অবশ্যই ইন্ডিকেটর বাতি জ্বালাতে হবে।
- স্পীড ব্রেকারে গাড়ির গতি অবশ্যই কমাতে হবে।
- রাতের বেলায় সামনের গাড়ির সতর্কতার জন্য ডিপার লাইট ব্যবহার করুন।
- বাজার এলাকায় গাড়ির গতি সর্বনিম্ন রেখে বাজার অতিক্রম করুন।
চালকের বর্জণীয় কাজ
Driver ki ki kaj korbe na
- অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাবেন না।
- চলন্ত গাড়িতে কারও সাথে কথা বলবেন না।
- একটি হেড লাইট জ্বালিয়ে রাতে গাড়ি চালাবেন না- কারণ অপরদিক থেকে আগত গাড়ি আপনার বাস/ট্রাককে মোটর সাইকেল মনে করতে পারে। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
- ত্রুটিপূর্ণ হেড লাইট, ব্যাক লাইট, ব্রেক লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট ইত্যাদি জ্বালিয়ে গাড়ি চালাবেন না।
- রাত্রি কালে হাই-বীম বাতি জ্বালিয়ে গাড়ি চালাবেন না।
- নির্ধারিত গতি সীমার বাইরে গাড়ি চালাবেন না।
- ওভারটেকিং নিষিদ্ধ এলাকায়, রাস্তার বাঁকে, সরু ব্রীজে ওভারটেক করবেন না।
- গাড়ির ছাদে যাত্রী বা ভারী মালামাল তুলবেন না।
- গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী তুলবেন না।
- মাদক দ্রব্য সেবন করে গাড়ি চালাবেন না।
- ঘুম ঘুম ভাব হলে গাড়ি চালাবেন না।
- গাড়ী চালানো অবস্থায় নিজে ধুমপান করবেন না ও যাত্রীগণকে ধুমপান হতে বিরত রাখবেন।
- পথচারী ও ক্ষুদ্র যানবাহনের প্রতি ঝুঁকি সৃষ্টি হয় এমন ভাবে গাড়ি চালাবেন না।
- গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না।
- রাস্তার উপর যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াবেন না।
- অযথা ওভারটেক করবেন না, ওভারটেক সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
- অকারণে হর্ণ বাজাবেন না। হর্ণ শব্দ দূষণ করে। ক্রমাগত উচ্চ শব্দের হর্ণ আপনারও শ্রবণ শক্তির ক্ষতি করতে পারে।
- অস্বাভাবিক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাবেন না।
- জেনারেল এ্যানেস্থেসিয়া(সাধারণ চেতনা নাশক ঔষধ) নেয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গাড়ি চালাবেন না।
- উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপজনিত অসুস্থতা থাকলে গাড়ি চালাবেন না।
- একনাগাড়ে সাড়ে ৪ ঘন্টার বেশী গাড়ি চালাবেন না।
- সপ্তাহে ৬ দিনের বেশী গাড়ি চালাবেন না।
- মানসিক টেনশন বা মাথা ব্যথা হলে গাড়ি চালাবেন না।
- অন্য গাড়ি, চালক এবং যাত্রীদের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে নিজের বাহাদুরী প্রদর্শনের জন্য প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালাবেন না।
আপনার জীবন অত্যন্ত মূল্যবান, নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলো অবহেলা করে একে অকালে ঝরে যেতে দেবেন না। এগুলো মেনে চললেই সার্থক হবে আমার লিখা।
তথ্যসূত্রঃ BRTA