নিজের কিংবা অন্যের গাড়ি যাইহোক না কেন চালনার আগে কিছু কাজ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা খুবই প্রয়োজন। কেননা গাড়ির যেকোন সমস্যা দেখা দিতে পারে রাস্তায় চালানোর সময় এমনকি এর কারণে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। চালনার পূর্বে একটু সচেতনতায় পারে এই দূর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করতে। আসুন জেনে নেওয়া যাক গাড়ি চালনার আগে করণীয় কাজগুলোঃ-
১. জ্বালানি দেখে নেওয়াঃ ধরুন আপনি রাস্তায় গাড়ি চালানো অবস্থায় স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেলে। কারণ কি? দেখলেন যে জ্বালানি নেই। তাই রাস্তায় এই ধরনের বিপদে যেন না পড়তে হয়, সেজন্যে গাড়ি চালানোর আগেই আপনার জ্বালানি ( ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাস ইত্যাদির যেটিতে আপনার গাড়ি চলে তা) আছে কিনা পরীক্ষা করা এবং না থাকলে পরিমাণ মতো নেওয়া।
২. পানি চেক করাঃ গাড়িতে সাধারণত দুটি স্থানে পানি(ডিস্ট্রিল ওয়াটার) দিতে হয়। একটি হলে ব্যাটারি আর অন্যটি হলো রেডিয়েটর। গাড়ি চালানোর পূর্বে অবশ্যই এ দুটির পানি পরীক্ষা করতে হবে, না থাকলে পরিমান মত নিতে হবে। কেননা ব্যাটারিতে পানি না থাকলে ব্যাটারি খারাপ হয়ে যাবে অন্যদিকে রেডিয়েটরে পানি না থাকলে ইঞ্চিন হিট হয়ে বিকল হয়ে যাবে।
৩. ব্যাটারি কানেকশন দেখাঃ ব্যাটারি কানেকশন ঠিক না থাকলে গাড়ি স্টার্ট হবে না। তাই ব্যাটারি কানেকশন পরীক্ষা করা উচিত।
৪. মবিলের লেবেল দেখাঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ মবিল/লুব/ইঞ্চিন অয়েল না থাকলে ইঞ্চিন ক্ষয় হবে এবং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই গাড়ি চালানোর আগে মবিলের লেবেল ও ঘনত্ব পরীক্ষা করতে হবে এবং কম থাকলে পরিমাণ মত নিতে হবে।
৫. ব্রেক অয়েলঃ ব্রেক ফেইল হওয়ার অন্যতম কারণ ব্রেক অয়েল না থাকা। এর ফলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। এজন্য মাস্টার সিলিন্ডারের ব্রেকফ্লুইড, ব্রেকঅয়েল পরীক্ষা করতে হবে ও কম থাকলে নিতে হবে।
৬. চাকাঃ যেহেতু গাড়ি চলার মাধ্যম চাকা সেহেতু গাড়ির চাকা চেক করা খুবই প্রয়োজন। টায়ার কন্ডিশন, হাওয়া, নাট, এলাইমেন্ট, রোটেশন, স্পেয়ার চাকা ইত্যাদি পরীক্ষা করতে হবে।
৭. বিপদের বন্ধুকে সাথে রাখাঃ কিছু জিনিস আছে যা বিপদে আপনাকে সাহায্য করবে। সেগুলো হলোঃ-
ক) দলিল সাথে রাখাঃ কি ভাবছেন! এটা জমির দলিল নয়। আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্সটোকেন, ইনসিওরেন্স সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুটপারমিট ইত্যাদি কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে। কেননা এগুলো ট্রাফিক সার্জেন্টকে না দেখাতে পারলে বিপদে পড়বেন।
খ) অগ্নিনির্বাপকযন্ত্র রাখাঃ গাড়িতে যেকোন কারণে অগ্নিকান্ড সংগঠিত হলে এটি আগুন নিভাতে আপনাকে সাহায্য করবে।
গ) ফাস্টএইড বক্স রাখাঃ গাড়িতে বা রাস্তায় প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার জন্য আপনাকে এটি সাহায্য করবে। এখানে প্রয়োজনীয় ঔষধ, এন্টিসেপটিক, ব্যন্ডেজ ইত্যাদি রাখতে হবে।
ঘ) টুলবক্স রাখাঃ গাড়িতে অতি প্রয়োজনীয় কিছু টুলস রাখতে হবে। যেগুলো মোটরযান জরুরি মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হয়।
৮. টেস্ট ড্রাইভ করাঃ গাড়ির ইঞ্চিন, লাইটিং সিস্টেম, ব্যাটারি, স্টিয়ারিং ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, নাট-বোল্ট টাইট আছে কি না তা দেখে নেওয়া। গাড়ি একটু চালিয়ে ব্রেক ও ক্লাসের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে মোটরযানটি ত্রুটিমুক্ত আছে কি না তা দেখতে হবে।
এছাড়া পূর্বে কেউ আপনার গাড়িটি চালিয়ে থাকলে তার থেকে জেনে নিতে পারেন গাড়িতে যান্ত্রিক কোন সমস্যা আছে কিনা। আসা করি এগুলো মেনে চললে চালক অনেক উপকৃত হবে।