কম্পিউটার হার্ডওয়্যার (Computer Hardware) হলো কম্পিউটারের এমন যন্ত্রাংশ যা আমরা চোখ দিয়ে দেখি ও হাত দিয়ে ধরতে এবং অনুভব করতে পারি। যেমন: আপনি কি আপনার মনিটর হাত দিয়ে ধরতে পারেন? আপনার কিবোর্ড হাত দিয়ে ধরা যায়? আর মাউস তো হাতে রেখেই কাজ করেন তাই না? তারমানে মনিটর কিবোর্ড, মাউস সবগুলোই হার্ডওয়্যার।
হার্ডওয়্যার কত প্রকার ও কি কি
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সাধারণত পাঁচ ধরনের হয়ে থাকে। যথা: ১. ইনপুট ডিভাইস ২. প্রসেসিং ডিভাইস ৩. স্টোরেজ বা মেমোরি ডিভাইস ৪. আউটপুট ডিভাইস ৫. যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন ডিভাইস। তাহলে এই প্রকারভেদ গুলো বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-
ইনপুট ডিভাইস
যে হার্ডওয়্যার গুলোর সাহায্যে কম্পিউটারে তথ্য বা ডাটা প্রদান করা হয় কিংবা নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে ইনপুট ডিভাইস(Input Device) বলে। ধরুন, আপনি যদি আপনার নিজের তথ্য দিয়ে একটি অনুচ্ছেদ বা প্যারাগ্রাপ লিখতে চান তাহলে কি দিয়ে লিখবেন? নিশ্চয় কিবোর্ড(Keyboard) দিয়ে। এবার আপনার লিখিত প্যারাগ্রাপটি সেভ করার জন্য সেভ বাটনে ক্লিক করতে হবে। কি দিয়ে করবেন? হ্যাঁ মাউস(Mouse) দিয়ে। তার মানে এই কীবোর্ড, মাউস হলো ইনপুট হার্ডওয়্যার। এরকম আরো ইনপুট হার্ডওয়্যার হলোঃ
- জয়স্টিক(Joystick) এর সাহায্যে গেমস্ খেলতে সুবিধা হয়।
- লাইটপেন(Light-Pen)
- ট্র্যাক বল(Track Ball)
- স্ক্যানার(Scanner) দিয়ে কোনো ডকুমেন্ট এর ছবি কম্পিউটারে নেওয়া হয়।
- মাইক্রোফোন(Microphone)
- গ্র্যাফিক ট্যাবলেট(Graphics Tablet)
- ওয়েবক্যাম(Webcam)
- অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিডার(Optical Character Reader/Recognition)
- বার কোড রিডার(Bar Code Reader)
- ম্যাগনেটিক ইংক কার্ড রিডার(Magnetic Ink Character Recognition)
- অপটিক্যাল মার্ক রিডার(Optical Mark Reader) ইত্যাদি।
প্রসেসিং ডিভাইস
যেসব যন্ত্রাংশের সাহায্যে কম্পিউটারের ডাটা প্রক্রিয়াকরণ করা হয় সেগুলোকে প্রসেসিং ডিভাইস বলে। ধরুন আপনি কম্পিউটারকে নির্দেশ দিলেন 5 আর 10 যোগ করতে, এখন যে যন্ত্রাংশের সাহায্যে কম্পিউটার যোগের কাজ সম্পন্ন করে সেগুলোকে প্রসেসিং ডিভাইস বলে। উল্লেখযোগ্য প্রসেসিং হার্ডওয়্যার(Processing Hardware) এর নাম হলোঃ গ্র্যাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট, মাইক্রোপ্রসেসর, সাউন্ড কার্ড, ভিডিও কার্ড, সিপিইউ, চিপসেট, মাদারবোর্ড (Motherboard), বাস, এক্সপানশন স্লটস্, নেটওয়ার্ক কার্ড, এড্রেস বাস ক্যাবেল, র্যাম ইত্যাদি।
স্টোরেজ/মেমোরি ডিভাইস
যেসব ডিভাইসের সাহায্যে কম্পিউটারের তথ্য স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যায় সেগুলোকে স্টোরেজ বা মেমোরি ডিভাইস(Storage/Memory Device) বলে।ধরুন আপনি কম্পিউটারে আপনার ছবি রাখবেন। এখন কোথায় রাখবেন? নিশ্চয় হার্ডডিস্কে তার মানে হার্ডডিস্ক (Harddisk) হলো স্টোরেজ হার্ডওয়্যার।অন্যান্য স্টোরেজ ডিভাইসগুলো হলোঃ এসএসডি(SSD), সিডি/ডিভিডি, পেন ড্রাইভ ইত্যাদি।
আউটপুট ডিভাইস
আউটপুট ডিভাইস হলো এমন একটি হার্ডওয়্যার উপাদান যা কম্পিউটার সিস্টেম দ্বারা প্রক্রিয়া কৃত ডেটার ফলাফল প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ধরুন, আপনি কম্পিউটারে প্রদানকৃত প্যারাগ্রাফটি দেখতে চান। কিভাবে দেখবেন? নিশ্চয় মনিটর(Monitor) দিয়ে। আবার প্যারাগ্রাপটি যদি প্রিন্ট করতে চান তাহলেতো প্রিন্টার(Printer) লাগবে। তারমানে মনিটর ও প্রিন্টার আউটপুট ডিভাইস। কেননা এগুলোর সাহয্যে কাজের ফলাফল দৃশ্যমান হয়। অন্যতম আউটপুট হার্ডওয়্যার(Output Hardware) হলোঃ স্পিকার, হেডফোন, প্রজেক্টর, প্লটার, ব্রাইল রিডার ইত্যাদি।
যোগাযোগ ডিভাইস
যেসব যন্ত্রের সাহায্যে কম্পিউটার তথ্য বা ডাটা আদান করে অথবা কোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে থাকে তাদেরকে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ ডিভাইস বলে। অন্যতম যোগাযোগ হার্ডওয়্যার(Communication Hardware) হলোঃ ব্লু-টুথ ডিভাইস, মডেম, রাউটার (Router) ইত্যাদি।
কিছু কিছু ডিভাইস রয়েছে যেগুলো একইসাথে ইনপুট-আউটপুট উভয় হার্ডওয়্যার হিসাবে কাজ করে। আবার কিছু ডিভাইস প্রসেসিং ও আউটপুট উভয় হার্ডওয়্যার হিসাবে কাজ করে। উপরোক্ত হার্ডওয়্যার গুলো ছাড়াও কম্পিউটারের আরো বিভিন্ন প্রকার হার্ডওয়্যার রয়েছে।