বিশ্বের ১১৯ তম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (e-passport) প্রক্রিয়া চালু করে। তবে পূর্বের MRP বা Machine Readable Passport বাতিল না হলেও নতুন কাউকে বা নাবায়নকারীদেরকে MRP না দিয়ে দেওয়া হবে ই পাসপোর্ট(E-Passport)।
ই পাসপোর্ট কি? কেমন হবে? মেয়াদকাল
ই পাসপোর্ট হলো এমন বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট যাতে এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ আছে। e-passport এ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা বসানো থাকে। এই চিপের মধ্যে পাসপোর্টকারীর ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, আইরিশ ইত্যাদিসহ তার ব্যক্তিগত সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ই-পাসপোর্ট অনেক বেশী নিরাপদ। ই-পাসপোর্টকে বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট বা ডিজিটাল পাসপোর্টও বলা হয়। ই-পাসপোর্ট বর্তমানের বই আকারের পাসপোর্টের মত হলেও এতে ব্যক্তির পরিচয় সংবলিত দুটি পাতার পরিবর্তে পলিমারের তৈরি কার্ড থাকবে। আর এই কার্ডের মধ্যে যে চিপ থাকবে তাতেই পাসপোর্ট বাহকের সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। ই-পাসপোর্টের দুই ধরণের মেয়াদকাল থাকবে। ৫ বছর ও ১০ বছর। ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদেরকে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট দেওয়া হবে। আর যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তারা পাবে ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট। ফরম পূরণের আগে দেখে নিন: ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী
ই-পাসপোর্ট আবেদনের ৫(পাঁচ) টি ধাপ বা প্রক্রিয়া
ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য ৫টি সহজ ধাপ রয়েছে। ধাপগুলো হলো:
ধাপ-১ : বর্তমানে বসবাসরত জেলাতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে কি না দেখে নিতে হবে
চালুকৃত ই-পাসপোর্ট অফিসগুলির তালিকা
ধাপ-২ : অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করুন
নতুন বা রিইস্যু আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য https://www.epassport.gov.bd/onboarding এই ঠিকানায় গিয়ে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে আবেদন করুন। প্রথমে আপনার জেলা, থানা সিলেক্ট করতে হবে, এরপর ইমেইল দিতে হবে, তারপর পাসওয়ার্ড/মোবাইল নম্বর দিয়ে সাইন আপ করতে হবে। এরপর পরবর্তী নির্দেশনা পালন করে আপনার সকল তথ্য দিতে হবে।
ধাপ-৩ : পাসপোর্ট ফি পরিশোধ
ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া এবং ঢাকা ব্যাংক ফি দেওয়া যাবে।
নিম্নোক্ত হারে পাসপোর্ট ফি প্রযোজ্য হবে ( ১৫% ভ্যাট সহ ) :
৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- ১৫ কর্মদিবস /২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৪,০২৫ টাকা
- ৭ কর্মদিবস / ১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ৬,৩২৫ টাকা
- ২ কর্মদিবসের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ৮,৬২৫ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- ১৫ কর্মদিবস /২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৬,৩২৫ টাকা
- ৭ কর্মদিবস / ১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ৮,৬২৫ টাকা
- ২ কর্মদিবসের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ১২,০৭৫ টাকা
৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- ১৫ কর্মদিবস /২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৫,৭৫০ টাকা
- ৭ কর্মদিবস / ১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ৮,০৫০ টাকা
- ২ কর্মদিবসের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ১০,৩৫০ টাকা
৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছর মেয়াদ সহ পাসপোর্ট
- ১৫ কর্মদিবস /২১ দিনের মধ্যে নিয়মিত বিতরণ: ৮,০৫০ টাকা
- ৭ কর্মদিবস / ১০ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ: ১০,৩৫০ টাকা
- ২ কর্মদিবসের মধ্যে অতীব জরুরী বিতরণ: ১৩,৮০০ টাকা
বি:দ্র: যাদের এনওসি /অবসর সনদ (সরকারি চাকরিজীবিদের ক্ষেত্রে) রয়েছে তারা নিয়মিত ফি জমা দেওয়া সাপেক্ষে জরুরী সুবিধা পাবেন।
ধাপ-৪ : ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ
ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিয়েছেন কি না নিশ্চিত হোনঃ ১। আবেদনপত্রের সারংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ) ২। সনাক্তকরণ নথির প্রিন্ট কপি (জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন নং) ৩। পেমেন্ট স্লিপ ৪। পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি (যদি থাকে) ৫। তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র(যদি থাকে) ৬। আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি(ঐচ্ছিক )
ধাপ-৫ : পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ
- ডেলিভারী স্লিপ/রশিদ: এনরোলমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর প্রদেয় স্লিপ দিয়ে আপনার অঞ্চলিক অফিস থেকে পাসপোর্ট নিতে পারবেন।
- অনুমোদিত প্রতিনিধির কাছে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
১। সরকারি চাকরিজীবীদের কে অনলাইন আবেদন করার সময় সাধারণ পাসপোর্ট হিসাবে আবেদন করতে হবে ২। পরবর্তীতে পাসপোর্ট অফিসে এনরোলমেন্ট করার সময় অফিসিয়াল হিসাবে চিহ্নিত করতে হবে ৩। অফিসিয়াল পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে কোন প্রকার অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিডিউল গ্রহন করতে হবে না
বিঃদ্রঃ সরকারি পাসপোর্ট কেবলমাত্র পাঁচ বছর মেয়াদে পাওয়া যাবে।
পাসপোর্ট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা ও আবেদনের পর জানতে
আপনার নিকটস্ত পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন অথবা এখানে দেখুন। সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন গুলো দেখাতে এই ঠিকানায় যান https://www.epassport.gov.bd/landing/articles/faq বা নিচে দেখতে পারেন।
আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থান জানতে ‘এখানে https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status’ এই ঠিকানায় গিয়ে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি/ অ্যাপ্লিকেশন আইডি এবং জন্ম তারিখ দিবেন।
- করোনার শাটডাউনের কারণে আমি আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করেছি, আমার কী করা দরকার?
- আমার অনলাইন আবেদনের পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি। এখন কি করা উচিত?
- অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভেশন ই-মেইল পাইনি। আমার কি করা উচিত?
- আমি আমার অ্যাপ্লিকেশন ডেটাতে ভুল করেছি এবং আমার আবেদন ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে – আমি কী করতে পারি?
- আমি অনলাইন অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা পেয়েছি – আমি কী করতে পারি?
- আমি আমার অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছি এবং আমার এনআইডি বা বিআরসি নম্বর দিয়ে একটি নতুন আবেদন জমা দিতে চাই -কিন্তু এটি কাজ করে না। আমি কি করতে পারি?
- আমার পাসপোর্ট আবেদনের অগ্রগতি কিভাবে দেখতে পারব ?
- আমার পূর্বের এমআরপি পাসপোর্টের তুলনায় আমার কিছু ডেটা পরিবর্তিত হয়েছে – আমি কীভাবে আবেদন করতে পারি?
- আমার পূর্ববর্তী পাসপোর্টের তুলনায় আমার বর্তমান ঠিকানাটি পরিবর্তিত হয়েছে – আমাকে কোথায় আবেদন করতে হবে?
- আমার একটি এমআরপি আছে – আমি কিভাবে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারি ?
- অনলাইন আবেদন করার সুবিধা ।পাসপোর্ট অফিসে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট কিভাবে পেতে পারি ?
- ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য কি কি দলিলাদি প্রয়োজন?
- আমার ই-মেইল অ্যাড্রেস নাই। আমি আনলাইন আবেদন করতে পারবো ?
- অনলাইনে আবেদনে কি ই-মেইল অ্যাড্রেস পরিবর্তন করা যায় কি ?
- অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন অ্যাকাউন্ট থেকে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করা যাবে কি ?
- পিডিএফ আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট সম্ভব কি না ?
- ই-পাসপোর্টে আবেদনের জন্য সাথে করে ছবি আনতে হবে কি না ?
- আবেদন সম্পন্ন করার পর কি জরুরী সেবার জন্য আবেদন রূপান্তরিত করা যাবে ?
- ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য এম আর পি আবেদন ফরম ব্যবহার করা যাবে কি না?
- কোথায় ই-পাসপোর্ট পাবো ?
- আমি আমার পাসপোর্ট অফিসে, নিকটবর্তী কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট সময়সূচী পাইনা – আমি কী করতে পারি?
- অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল বা সময় পরিবর্তন করা যাবে কি ?
- নামের “Given Name” এবং “Surname” অংশটি কিভাবে পূরণ করব ?
- ই-পাসপোর্টের জন্য ফি পরিশোধ
অতীব জরুরী পাসপোর্ট সেবা কি?
কিছু ক্ষেত্রে নাগরিকদের অতীব জরুরী (খুব কম সময়ের মধ্যে) পাসপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শর্ত ও ফি পরিশোধ সাপেক্ষে অতীব জরুরী পাসপোর্ট সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। অতীব জরুরী পাসপোর্ট ২ (দুই) কর্মদিবসের মধ্যে প্রদান করা হবে। বাংলাদেশি যে কোন নাগরিক আবেদন করতে পারবেন। নতুন অতীব জরুরী ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে অনুকূল প্রাক-পুলিশ প্রতিবেদন প্রয়োজন হবে। তবে ২০১০ সাল থেকে ইস্যুকৃত এমআরপি(MRP) ব্যবহারকারী পূর্বের স্থায়ী ঠিকানার তথ্য অপরিবর্তনীয় রেখে আবেদন করলে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন প্রয়োজন হবে না। প্রাক-পুলিশ প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে ‘এই ঠিকানায় যান’। বাংলাদেশের যেকোনো বিভাগীয়/আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করা যাবে। এই সেবাটি বাংলাদেশ দূতাবাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। শুধুমাত্র আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস থেকে অতীব জরুরী পাসপোর্ট বিতরণ করা হবে। ঠিকানা : বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, ভবন নং – ২ই-৭, শের-ই-বাংলা নগর, আগারগাওঁ, ঢাকা-১২০৭। যোগাযোগঃ +৮৮০২-৮১২৩৭৮৮ ।
বি.দ্রঃ বর্তমানে অতীব জরুরী (Super Express) সেবাটি শুধুমাত্র এমআরপি (MRP) পাসপোর্ট ধারীগণের স্থায়ী ঠিকানা অপরিবর্তিত রেখে ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে চালু আছে। উক্ত সেবাটির আবেদন সকল অফিসে করা গেলেও পাসপোর্ট বুকলেট টি আগারগাওঁ অফিস(উল্লেখিত ঠিকানা ) থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ https://www.epassport.gov.bd/