স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, ঝলমলে চুল পেতে প্রায় সব নারীই নানারকম চেষ্টাসাধনা করে থাকেন। কিন্তু প্রতিদিন নিজের অজান্তেই করা কিছু ছোট ছোট ভুল আমাদের চুলকে করে দিতে পারে রূক্ষ, নিষ্প্রাণ! চুলের যত্নে করা এ ধরনের ছোট ছোট ভুলগুলো বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে আমাদের চুলকে। যেমন চুল ভেঙ্গে যাওয়া, রূক্ষ হয়ে যাওয়া, এমনকি চুল পড়ারও কারণ হতে পারে এসব ভুলগুলো। culer zotno newa
এ ধরনের ভুলগুলো কিন্তু আমরা নিজেদের অজান্তে দৈনন্দিন অভ্যাসবশতই করে ফেলছি। ছোটখাট এ ভুলগুলো বর্জন করে চুলের যত্নে করণীয় কিছু বিষয় নিয়েই তিনটি পর্বে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করবো।
প্রথম পর্বে আলোচনা করবো তিনটি বিষয় নিয়ে, চলুন জেনে নিই কি সেগুলোঃ
চুলে শ্যাম্পুর যথাযথ ব্যবহার
চুল পরিষ্কার করতে আমরা সকলেই চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকি। সুন্দর, রেশমি চুল পেতে সঠিক মাত্রায় শ্যাম্পুর ব্যবহারও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণ শ্যাম্পু ব্যবহারে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে ত্বকে বিচি ও মরা চামড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে, প্রয়োজনমত সঠিক মাত্রায় শ্যাম্পু ব্যবহার না করলেও তা চুলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এতে মাথার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে খুশকি সমস্যা দেখা দিতে পারে। mathar cule shampu dewar niom
অর্থাৎ চুলে সঠিক মাত্রায় শ্যাম্পুর ব্যবহার করা না হলে তা নিশ্চিতভাবে চুলের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। কোন চুলে কোন মাত্রায় শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে তা নির্ভর করে চুলের ধরণের উপর। যেমন শুষ্ক চুলে প্রতি দু’তিন দিন পর পর শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার তৈলাক্ত চুলে প্রায় প্রতিদিনই শ্যাম্পু করা যেতে পারে যাতে করে চুলের তৈলাক্ত ভাব কমানো যায়।
চুলে যেনো কোনভাবেই ঘাম না জমে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। চুল অতিরিক্ত ঘেমে গেলে শ্যাম্পু করে চুল পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। তা না হলে ঘামের কারণে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল পড়া সমস্যা দেখা দিতে পারে।চুলের যত্নে শ্যাম্পুর সঠিক ব্যবহার করতে হবে।
ভেজা চুলে স্টাইল এড়িয়ে চলা
ভেজা অবস্থায় চুল খুবই স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকে। এ অবস্থায় চুল আঁচড়ালে বা চুলে কোন স্টাইল করতে গেলে চুলে জোরে টান পড়ে।
ফলে চুলের কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চুল ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই খুব ভেজা অবস্থায় চুল আঁচড়ানো বা চুলে ব্রাশ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। ভেজা চুলে স্বাভাবিক পরিচর্যার নিয়ম হলো, চুল শুকানোর জন্য ব্লো-ড্রাই করার আগে অবশ্যই চুলকে স্বাভাবিকভাবে তোয়ালে দিয়ে কিছুটা শুকিয়ে নিতে হবে। তবে, অবশ্যই তোয়ালে দিয়ে ঘষে ঘষে চুল শুকানো উচিত নয়। এটি চুলের কিউটিকলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
চুলে যে কোন স্টাইল করার আগে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন চুল অন্তত ৯০ ভাগ শুকিয়ে নেয়া হয়।চুলের যত্নে সঠিক স্টাইল করতে হবে।
ভুল খাদ্যাভ্যাস পরিত্যাগ করা
ভুল খাদ্যাভ্যাসের দরুণ সৃষ্ট অপুষ্টি চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যদি পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলের উপস্থিতি না থাকে, তাহলে তা আমাদের চুলের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করতে পারেনা। এছাড়া অপরিমিত আয়রনের উপস্থিতি আমাদের দেহে রক্তস্বপ্লতা ঘটাতে পারে, যেটিও চুল পড়ার জন্য দায়ী। ক্র্যাশ ডায়েটের মত ভুল খাদ্যচর্চাও চুলের পুষ্টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ফলে চুল পড়া সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ক্ষুধামন্দা ও অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের চাহিদার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা ঠিক করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন এতে সঠিক মাত্রায় সকল খাদ্য উপাদানের উপস্থিতি থাকে। চুলের যত্নে সঠিক খাবার খেতে হবে। culer zotne khabar
চুল যে কোন মানুষের সৌন্দর্যেরই একটি প্রধান অংশ। তাই চুলের যত্ন নিতে আমরা কত কিছুই না করি। কিন্তু না জেনে দৈনন্দিন কিছু ছোট ছোট ভুলে আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছি আমাদের চুলের স্বাস্থ্যকে। ভুলগুলোর বিষয়ে একটু সচেতন থাকলেই আমরা অনায়াসে পেতে পারি সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল।
এ রকম আরও কিছু সাধারণ ভুল আছে যেগুলোর বিষয়েও সকলের সচেতন থাকা উচিত। সে ধরনের আরও কিছু ভুল নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করবো। আশা করি আমাদের সকল পাঠক এ আলোচনা থেকে নিজেরা উপকৃত হবেন এবং শেয়ার করে বন্ধুদের জানতেও সাহায্য করবেন।