গাজর ভিটামিন এ যুক্ত

ভিটামিন এ এর উৎস, কাজ ও অভাবজনিত রোগ

সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের শরীরে ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। অনেক প্রকারের ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ অন্যতম। ভিটামিন এ একটি ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন যা প্রাকৃতিকভাবে অনেক খাবারেই উপস্থিত থাকে। ভিটামিন এ সাধারণ দর্শন(চোখে দেখা), রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলি সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। আজ আমরা জানবো কোন কোন ফলে, মাছে ‍ও শাকসবজিতে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়, এর কাজ কি ও এটির অভাবে কী কী রোগ হতে পারে।

কোন খাদ্যে ভিটামিন ’এ’ পাওয়া যায়?

গাজর
গাজরে ভিটামিন এ পাওয়া যায়
মলা মাছ
দেখতে ছোট হলেও এই মলা মাছে প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায়

মাছের তেল, ক্যারোটিন সমৃদ্ধ শাকসবজি, বিভিন্ন প্রকার রঙিন ফলমূল ও প্রাণিজ স্নেহে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ’এ’ পাওয়া যায়। এর উৎসগুলো হলোঃ ১. শাকসবজিঃ লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, লাউ, টমেটো, ব্রোকলি গাজর, ফুলকপি, বীট, মিষ্টি আলু ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। ২. মাছঃ মলা ও ঢেলা মাছে ও  কড মাছের যকৃতের তৈল। ৩. ফলমূলঃ পাকা পেঁপে, আম, কাঁঠাল, বেল, আপেল, কলা, তরমুজ ইত্যাদি ফল।

কলিজা
কলিজাতে প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায়

এছাড়া প্রাণিজ থেকে বিশেষ করে  দুধ, মাখন, পনির, ডিমের কুসুম, কলিজা বা যকৃৎ এর মধ্যে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।

ভিটামিন ’এ’ এর কাজ কী?

  • দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে ভিটামিন এ সাহায্য করে।
  • আমরা যে খাবার খায় তা হজমে ও ক্ষুধা সৃষ্টিতে কাজ করে।
  • আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে।
  • রক্তে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখে।
  • ত্বককে সুস্থ রাখে এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে।

ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে কোন রোগ হয়?

শরীরে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব হলে নানা ধরনের রোগ হয়ে থাকে। সর্দি, কাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা সহ নানা প্রকার রোগ হতে পারে। তবে সবচেয়ে বিপদজনক রোগগুলো হলো রাতকানা রোগ ও জেরপথালমিয়া রোগ। দুইটি রোগই কিন্তু চোখের রোগ। আসুন জেনে নিই রাতকানা রোগ কি এবং জেরপথালমিয়া রোগ কি?

রাতকানা রোগ
রাতকানা রোগ হলে অন্ধকারে গাড়িটি দেখতে পাবে না।

১. রাতকানা রোগঃ রাতের বেলায় অল্প আলোতে কম দেখা বা দেখতে না পারাকে রাতকানা রোগ বলে। এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। তাই তাদেরকে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি ও রঙিন ফলমূল খাওয়াতে হবে। টিকা দিবসে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো উচিত। কেননা এটি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

২. জেরপথালমিয়াঃ ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে চোখের পানি শুকিয়ে যায় ও চোখের আদ্রতা হারায়।ফলে চোখের কার্নিয়ার উপর শুষ্ক আবরণ পড়ে তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ সমস্যার কারণে চোখ আলো সহ্য করতে পারে না। চোখে পুঁজ জমা ও চোখের পাতা ফুলার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রাতকানা ও জেরপথালমিয়া রোগের সময়মত চিকিৎসা না করালে চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ধরনের রোগের বৈশিষ্ট দেখা দিলে দ্রুত অভিজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে। নিয়মিত ভিটামিন এ গ্রহণ করলে এসব রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশি খেয়াল রাখতে হবে গর্ভবতী নারী, শিশু, বৃদ্ধ এদের প্রতি যেন তাদের দেহে এর অভাব পড়ে। 

https://bn.wikipedia.org/wiki/ভিটামিন_এ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *